বঙ্গ নারী সম্মান ; নারীশক্তির অকাল বোধন

কলকাতার বুকে হয়ে গেল এক অনবদ্য প্রয়াস যা নারী শক্তিকে সম্মান জানায়। গত ১৫ই জুন কলকাতার আইসিসিআর সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে রেডওয়াইন এন্টারটেইনমেন্টের পরিচালনায় হয়ে গেল বঙ্গনারী সম্মান ২০২৫। বঙ্গনারী তথা নারী শক্তির উদযাপনের জন্যই আয়োজিত ছিল এই সম্মান প্রদর্শন অনুষ্ঠান। রেড ওয়াইন এন্টারটেইনমেন্ট পরিচালিত এই বঙ্গনারী সম্মান এ বছর চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করলো, সম্মান জানানো হলো সমাজের বিভিন্ন স্তরের এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১৮ জন ভিন্ন নারীদের। উপস্থিত ছিলেন আয়োজক অভিজিৎ গুপ্ত, অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বুম্বা মুখার্জী সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের গুণী ব্যক্তিত্ব, প্রশাসনিক আধিকারিক, শিল্পী প্রমুখ।

এই গৌরবময় সন্ধ্যায় পুরস্কৃত হলেন অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সমাজকর্ম, শিক্ষা, সাহিত্য, চিকিৎসা সহ বহু বিভাগের প্রতিষ্ঠিত নারীরা। সম্মান প্রাপকের অন্যতম উল্লেখযোগ্য হলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ডব্লিউবিসিএস অফিসার এবং রাজস্ব বিভাগের যুগ্ম কমিশনার শ্রীমতি পাঁচালী মুন্সি (হালদার)। নারীদের উৎসর্গ করা এই সন্ধ্যায় কিছুটা ব্যতিক্রমী হই তিনি বলেন প্রতিটি সফল পুরুষের পেছনে একজন নারী থাকেন এই কথা তার ক্ষেত্রে খাটে না। বরং তার স্বামী অনুপম হালদার তার সহযোদ্ধাই বটে। অপরদিকে খ্যাতনামা সঞ্চালক তথা অভিনেত্রী শাশ্বতী গুহ ঠাকুরতা বলেন “সম্মান পেতে কার না ভালো লাগে তাই এই সম্মান পেয়ে পুরস্কার পেয়ে আমি ভীষণ খুশি। তবে ১৯৭৫ থেকে ২০২৫ এতগুলো বছর ধরে দর্শকের যে ভালোবাসা পেয়েছি সেটাই সবথেকে বড় সম্মান।”

রবিবারের এই সন্ধ্যায় পুরস্কৃত হলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী অনামিকা সাহা, খ্যাতনামা নাট্য শিল্পী অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল, প্রথিতযশা গায়িকা স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শেফ মৌমিতা আচার্য, পরিচালক ও অভিনেত্রী মানসী সিনহা, সমাজকর্মী নন্দিনী ভট্টাচার্য সহ প্রমুখ। নন্দিনী ভট্টাচার্যের কথায় “বহু মানুষের জন্য লড়াই করছি। তাই এই সম্মান কেবলমাত্র আমার নয় সমাজের যারা যেখানে লড়াই করছেন এই সম্মান তাদের সকলের।”

রেডওয়াইন এন্টারটেনমেন্টের কর্মকর্তাদের মতে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চলা বিভিন্ন বিভাগের তাদের এই যে মানুষকে সম্মান জানানোর উদযাপন তারা তারা চালিয়ে যেতে চায় এবং আরো অফবিট অনুষ্ঠান কলকাতা এবং আশেপাশের মানুষের জন্য করতে তারা উৎসাহী। অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক অভিজিৎ গুপ্তের কথায় “আমরা দীর্ঘ বছর ধরে এই অনুষ্ঠান করে আসছি তাই বহু ঘাত প্রতিঘাতের সম্মুখীন হতে হয়েছে কিন্তু সেটাও আমরা একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আশা রাখি ভবিষ্যতেও সেই সমস্ত পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করে আমরা আমাদের এই অনুষ্ঠান চালিয়ে যেতে পারবো। ” অন্যদিকে অভিনেত্রী তথা এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক তনুকা চ্যাটার্জি বলেন “আমরা এই অনুষ্ঠান তিন বছর আগে শুরু করেছিলাম আজ তা চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করলো। দীর্ঘ এই চার বছরের পথ চলা মোটেই সাধারণ ব্যাপার নয় বরং এটাই প্রমাণ করে যে আমরা কতটা সাকসেসফুল আর মানুষের কাছে এই বঙ্গনারী সম্মান কতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।”

রবিবারের গৌরবময় এই সন্ধ্যা মুখরিত হয়েছিল গানে, গল্পে,বক্তব্যে ও শিল্পীদের নিয়ে। বাংলার নারীশক্তিকে সম্মান জানানোর এই যে প্রয়াস তার জন্য অবশ্যই আয়োজকদের সাধুবাদ প্রাপ্য। এই পুরস্কার এই উৎসব আপামোর জনসাধারণের কাছে নারীর শক্তিকে শ্রদ্ধা এবং সম্মান জানানোর এক অন্যতম নিদর্শন ও প্রতীক বলা যেতে পারে। রেডওয়াইন এর কর্তৃপক্ষের এই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মহিলাদের সম্মান জানানোর এই যে উদযাপন তা আবারও প্রমাণ করলো মহিলারা আর কোন কিছুতেই থেমে নেই রাজ্য ও রাষ্ট্রের কাছে নারী শক্তি অদম্য। নিঃসন্দেহে তাদের এই প্রয়াস ভবিষ্যতে মানুষের কাছে এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে থাকবে এবং মহিলাদের তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেবে।

share

Facebook
LinkedIn
Pinterest
Telegram
Email
WhatsApp
Email
Threads
Scroll to Top